সিরাজউদ্দোলার পরাজয় নিয়ে অনেক গল্প, নাটক, সিনেমা হয়েছে। এ কারণে, ঘটনার বিবরণ কম বেশী সবাই জানে। শিক্ষিত তো বটেই, একজন অশিক্ষিত মানুষও সিরাজ উদ্দোলার কাহিনী জানে।
বিষয়টা নাটকীয় করতে, এসব গল্প উপন্যাসে শুধুমাত্র তার পরাজয় দেখানো হয়েছে। সিরাজউদ্দোলার শাসন আমল, তার স্বভাব, তার কার্যকলাপ ইত্যাদি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। এ কারণেই আমরা এই কাহিনীর একটি জিনিস খুব ভালো জানি, সেটা হলো - মীর জাফর ও আরো কয়েকজনের বিশ্বাস ঘাতকতা। এটাকেই আমরা পরাজয়ের কারণ বলে জানি।
আসলে সিরাজউদ্দোলার পরাজয়ের কারণ হলো
রাজ্য পরিচালনায় অদক্ষতা
উদ্দেশ্যহীন ও একতাহীন জনগণ
মাত্র ২৩ বছর বয়সে, সিরাজউদ্দোলা উত্তরাধিকার সূত্রে তিনটি রাজ্যের শাসক হয়েছিলেন। বাংলা (বাংলাদেশের ও পশ্চিমবঙ্গ), বিহার, উড়িস্যা। বর্তমানে এই এলাকায় মোট চারজন শাসক আছে। আজকের দিনের ২৩ বছর বয়সী একটি ছেলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়। তাকে পুরো একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে সামলাতে দিলে, সেটাও পারবে না। এই বয়সী একটা ছেলে ৩-৪ টা রাজ্য সামলাবে কিভাবে? কয়েকজন বিশ্বাস ঘাতকতা করে সিরাজ উদ্দোলাকে পরাজিত করেছে। আজকের দিনের শাসক, শেখ হাসিনা অথবা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশেপাশে কয়েক শত বিশ্বাস ঘাতক ঘোরাফেরা করে। এতে নেত্রীর কোন ক্ষতি হয় না। এমনকি বিষয়টা বোঝাও যায় না। একেই বলে দক্ষতা। সিরাজউদ্দোলা ছিলো অদক্ষ। সে এত বড় রাজ্য সামলাতে পারেনি। মাত্র এক বছর ক্ষমতায় টিকে ছিলো।
ভারতে ঢোকার বন্দর বোম্বাই ও মাদ্রাজে। ইংরেজ সেই পথে ঢুকেছে। কিন্তু ভারত দখল করা শুরু করেছে বাংলা ও তার আশেপাশের অঞ্চল থেকে। এর কারণ কি? কারণ হলো, তারা এই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশী উদ্দেশ্যহীন ও একতাহীন জনগণ খুঁজে পেয়েছে। যুদ্ধে পরাজয়ের পরে ইংরেজদের হতে বন্দি সিরাজউদ্দোলাকে দেখতে উৎসুক জনতার ঢল দেখে ইংরেজরা ঘাবড়ে গিয়েছিলো। অতগুলো মানুষ, পাথর ছুড়ে মারলই ইংরেজদের ভারত ছেড়ে পালিয়ে যেতে হতো। শুধুমাত্র সংখ্যায় বেশি হলেই জেতা যায় না। জিততে হলে লাগে সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ও একতা।
jahidulislam06 publisher