ডাক্তার জিভ দেখে কেন?

1 Answers   10.7 K

Answered 2 years ago

জিহ্বার রঙ বলে দেবে আপনি সুস্থ না অসুস্থ। রোগ নির্ণয়ে জিহ্বা একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা দেখে চিকিৎসকরা সহজেই রোগের লক্ষণ বুঝে ফেলেন। রোগের ভিন্নতায় জিহ্বা নানা বর্ণ ধারণ করে।

দিনের আলোয় জিহ্বার রঙ দেখা সবচেয়ে ভালো। উন্নত লাইটের মাধ্যমে যে কোনো সময় জিহ্বার রঙ পরীক্ষা করা যায়।

জিহ্বা দেহে রোগ নির্ণয়ের উপায় সম্পর্কে যুগান্তরকে পরামর্শ দিয়েছেন মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. ফারুক হোসেন।

জিহ্বার রঙ দেখতে হলে খাবার গ্রহণের অন্তত ৩০ মিনিট পর দেখতে হবে।

জিহ্বার রঙ পুরোপুরি নীল না হয়ে নীলাভ হতে পারে। সায়ানোসিসের ক্ষেত্রে জিহ্বা নীল বর্ণ ধারণ করতে পারে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে আপনার শরীরে অক্সিজেন দ্রুত কমে গেলে জিহ্বা এবং মুখের রঙ নীলাভ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত অক্সিজেন দিতে হবে।

এ ছাড়া ফুসফুসের কিছু রোগ যেমন সিওপিডিতে জিহ্বার রঙ নীলাভ হতে পারে। কখনো কখনো কিডনি রোগে জিহ্বার রঙ হালকা নীলাভ হতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের অভাবের কারণে জিহ্বার রঙ ফ্যাকাশে দেখা যায়।

জিহ্বার রঙ সাদা হলে শরীরে পানিশূন্যতা থাকতে পারে। ছত্রাক সংক্রমণ অথবা ভাইরাস জ্বরেও এমন হতে পারে।

জিহ্বার ওপর সাদা দাগ বা সাদা আবরণ বলে দেয় ওরাল থ্রাশের কথা। ওরাল থ্রাশ এক ধরনের ইস্ট সংক্রমণ। আবার লিউকোপ্লাকিয়া হলেও একই অবস্থা দেখা যেতে পারে।

জিহ্বার ওপর ব্যথাযুক্ত বাম্প ক্যানকার সোর বা মুখের আলসারের কারণে হতে পারে অথবা মুখের ক্যান্সারের কারণেও হতে পারে। জিহ্বার রঙ নীল হলে রোগীর শরীরে অক্সিজেনের অভাব হতে পারে।

কালো রঙের জিহ্বা প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া জমা হওয়ার কারণে দেখা দিতে পারে।

জেনেটিক কারণেও কালো রঙের জিহ্বা দেখা যেতে পারে। মাঝে মাঝে অ্যান্টিবায়োটিক এবং গ্যাস্ট্রিকের কিছু ওষুধ সেবনের পর জিহ্বার রঙ কালো হয়ে যেতে পারে।

আবার কিছু মাউথ ওয়াশ দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহার করলে জিহ্বার রঙ কালো হতে পারে। উজ্জ্বল লাল রঙের জিহ্বা দেখা গেলে বুঝতে হবে ফলিক এসিড অথবা ভিটামিন বি১২-এর অভাব থাকতে পারে।

এছাড়া স্কারলেট ফিবার এবং শিশুদের ক্ষেত্রে কাওয়াসাকি ডিজিজের ক্ষেত্রে জিহ্বার রঙ লাল হতে পারে।

হৃদযন্ত্রের কোনো রোগের ক্ষেত্রে জিহ্বার রঙ লাল হতে পারে। কালো অথবা হেয়ারি টাং ব্যাকটেরিয়ার বংশ বৃদ্ধির লক্ষণ হতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের অথবা অ্যান্টিবায়োটিক ও কেমোথেরাপি গ্রহণকারী রোগীদের ক্ষেত্রে হতে পারে।

হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা হলে জিহ্বার রঙ ধূসর হতে পারে। জিহ্বার উপরিভাগে সাদা আবরণ বেশি হলে সংক্রামক রোগ হতে পারে। আবার কোনো বিষক্রিয়ার কারণে এমন হতে পারে।

লিভার এবং পাকস্থলীর কোনো সমস্যা হলে জিহ্বার রঙ হলুদ অথবা হলুদাভ হয়ে থাকে। জিহ্বার ওপর ধূসর আস্তরণ গ্যাস্ট্রাইটিস এবং পেপটিক আলসারের লক্ষণ।

জিহ্বার ওপর বাদামি আস্তরণ ফুসফুসের কোনো রোগের লক্ষণ হিসাবে দেখা দিতে পারে।

হজমের সমস্যার ক্ষেত্রে জিহ্বার ওপর হলুদ আস্তরণ পড়তে পারে।

তবে জিহ্বার রঙ যেমনই হোক না কেন, তা দেখে কিন্তু পুরোপুরি একটি রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না। কোনো রোগ নির্ণয় করতে হলে রোগীর বিস্তারিত ইতিহাস এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে করতে হয়।

Shihab
dollorshaheb
120 Points

Popular Questions