Answered 3 years ago
Atmaja Bandyopadhyay কে ধন্যবাদ প্রশ্নটির উত্তর দিতে অনুরোধ জানানোর জন্য ।
প্রশ্নটি ভালো লেগেছে বিধায় রেখে দিলাম যে একটু ফ্রী হয়ে ধীরে সুস্থে দিবো । কিন্তু না সেভাবে সময় বের করা হচ্ছেনা । তবুও ফাঁকে লিখছি । অজ্ঞাত নামেই দিচ্ছি আশা করি তাতে কিছু যায় আসেনা ।
মূল প্রশ্নঃ জীবনের কোন কোন ক্ষেত্রে স্বার্থপর হওয়া উচিত? কেন?
দেখুন আমরা বুলি আওড়াতে কিংবা নীতি কথার ফুলঝুড়ি সাজাতে উস্তাদ ।
কিন্তু আদৌ বাস্তবতা ততোটা সুন্দর যে নীতিকথায় পেট ভরে ?
যদি এক কথায় উত্তর দেই তবে বলবো যেখানেই নিজের এবং পরিবারের স্বার্থ সেখানে অন্য কোন কিছুর বদলে নিজে স্বার্থপর হওয়া উচিত ।
যেখানে নিজের স্বার্থ আগে প্রয়োজন সেখানে অবশ্যই স্বার্থপর হবো । আমি নিশ্চয় নিজ স্বার্থ, নিজ পরিবার স্বার্থ চিন্তা না করে অপরের স্বার্থ চিন্তা করবোনা । হ্যা অনেকে করতে পারেন কিন্তু আমি না । আমি ঠেকে যেমনে শিখি তেমনি নিজেকে গড়বো নিজের মত করে ।
আমরা একদম নিস্বার্থপরায়ণ হই অনেক ক্ষেত্রে । তন্মধ্যে দুইটা ক্ষেত্র যেখানে আমি বাস্তবতা শিখেছি তার ব্যাপারে লিখছি এবং সেক্ষেত্রে আমি নিজ স্বার্থ আগে দেখি কিংবা স্বার্থপর হই ।
এইচএসসি এক্সামের সময়টার কথা আগে বলি । একটা বন্ধু সার্কেল । এদের নিয়ে আড্ডা মজা মাস্তি রাত জেগে । ঘুরাঘুরিও কম হয়নি এলাকায় । এইচএসসি এক্সামের সময় নিজে পড়ি না পড়ি সবার কথা ভেবে একটা গ্রুপ চলতো ।
আসলে তখন নিজের স্বার্থ কিংবা লাভ কোনটাই ভাবিনি ।
একসময় পরীক্ষা শেষ হয় । অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায় আমি কিছু কারনে পাইনাই । আমি শুরু করি সেকেন্ড টাইম প্রিপারেশন । সত্যি যে সেইসব বন্ধুদের সাথে তখন আর কথাই হয়না, এদের রেসপন্স আর পাইনা । অবস্থা বর্তমানে এমন যে দেখা হলে কেবল বন্ধুপ্রীতি । এছাড়া কোন কথা আমাদের হয়না ।
এক বন্ধু বর্তমানে কাতারে আছে । কলেজে সে কাতারে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলো পরীক্ষার । এরপর ফাইনাল এক্সাম দিয়ে আবার কাতারে চলে গেলো আর এরপর থেকে আমার সাথে আজ অবধি কোন কথা হয়নি । যোগাযোগ সম্পূর্ন বন্ধ তার দিক থেকে ।
অনার্স লাইফ । ইন্টার্নশীপ ৩ জন রুমমেট করবো স্থির করলাম । তাদের তেমন চেনা পরিচিত নাই । আমারও তেমন নাই । অমুক তমুক পরিচিতকে ধরে ম্যানেজ করার দায়িত্ব আমারই ।
কথা চলছে একজনের সাথে ম্যানেজের ব্যাপারে । এইদিকে শুনি গ্রুপের একজন ভালো একটা কোম্পানিতে ইন্টার্ন করতে আরেক গ্রুপে জয়েন হয়েছে । তাদের ইন্টার্ন রেডি হবার পরে জানলাম । বাকি একজন ছিলো তার অবস্থাও তাই । আরেকটা ভালো গ্রুপে জয়েন হয়ে গেলো ভালো পেইড ইন্টার্নের জন্য ।
এরপর অবস্থা এমন যে আমিই একা । এই সময়গুলা আমাকে শেখালো সবার আগে নিজের স্বার্থ । অপরের স্বার্থ পরে চিন্তা কর যখন কিনা তুমি তীরে এসে নিশ্চিন্তে আছো । মাঝ নদীতে ডুবতে থাকা আমি বাকি ডুবন্তদের সাথে নিয়া চিন্তা ভাবনা করা/ তাদের স্বার্থ দেখা আমার শিক্ষায় আর নাই ।
এ তো গেলো বন্ধু মহলে নিজ স্বার্থ ভাবার ক্ষেত্রে ।
এইচএসসি ফাইনাল এক্সামের সময়ে একই কলেজের সমবয়সী একটি মেয়ের প্রেমে পড়ি । প্রথম প্রেম সুতরাং বুঝতেই পারছেন । চলছিলো বেশ । মান অভিমান খুনসুটিই দিয়ে ।
একসময় যোগাযোগ বন্ধ করে দিলো । কেন ? কারন মেয়ের মা অসুস্থ্য, বিয়ের কথা বলছে, পাত্রও আসতেছে দেখতে বিসিএস ক্যাডার । তাই যোগাযোগ বন্ধ । যদি বিয়ে না হয় তবে আমার সাথে কথা হবে । হাহা ।
সময়টা ছিলো আমার সেকেন্ড টাইম এডমিশনের সময় ।
অথচ তার পড়াশোনা/পাবলিকে চান্স পাক তার জন্য কত কিই না করলাম । যদিও ন্যাশনালে ভর্তি হয়ে গিয়েছিল ।
সেসময় একদিকে এডমিশন অন্যদিকে যাকে নিজের ভেবেছি সে অন্যের হবে, অন্য কেউ তার স্পর্শ পাবে এইটা ভাবতেই নিজেকে ঠিক রাখা কঠিন হয়ে যেতো । মাথায় সারাক্ষণ তাই ভাবনা চলতো । সেসময়ে মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে যাই ।
তখন অনুধাবন করলাম পরিবারের ভালোবাসাটা । ছেলেটা সুস্থ্য হোক তার জন্য কথা কান্না কাটি, আপ্রাণ চেষ্টা ।
তখন বুঝলাম নিজে স্বার্থপর হলে হও যদি সেখানে পরিবারের বিষয় থেকে থাকে ।
সারসংক্ষেপে শেষে বলতে গেলে বলবো জীবনে সেসব ক্ষেত্রে স্বার্থপর হওয়া উচিত যেখানে নিজের স্বার্থ সবার আগে আসবে । নিজে যখন সেইফ তখন নাহয় ডুবন্তদের নিয়ে ভাববো ।
ashikafser publisher