কোন অঞ্চলের বায়ুর তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বস্তুর চাপ, বায়ু প্রবাহ, দৃষ্টিপাত, তুষারপাত, ঝড়, বায়ুপুঞ্জ, মেঘাচ্ছন্নতা ইত্যাদির দীর্ঘদিনের সামগ্রিক রূপকে ঐ স্থানের জলবায়ু (Climate)বলা হয়।
মূলত কোন স্থানের ২০-৩০ বছরের দৈনন্দিন আবহাওয়া পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে সে স্থানের নির্ধারণ করা হয় বা এ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
আবহাওয়ার মত জলবায়ুর ও প্রধান উপাদানগুলো হচ্ছে বায়ুর তাপ, চাপ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদি। আর এ উপাদানগুলোর নিয়ন্ত্রনকারী নিসমূহ হচ্ছে সমুদ্র প্রোন্ত, অক্ষাংশ, ভূ-পৃষ্ঠের উচ্চতা সমুদ্র হতে দূরত্ব, বায়ু প্রবাহের দিক ইত্যাদি।
জলবায়ুর উপাদান
জলবায়ুর সংজ্ঞা থেকে দেখতে পেলাম যে, কতকগুলো উপাদানের ওপর ভিত্তি করে কোন স্থানের আবহাওয়া ও জলবায়ু গড়ে ওঠেছে। নিম্নে এ উপাদান সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
১. তাপমাত্রা :
সূর্য হচ্ছে তাপের প্রধান উৎস। বায়ুর উষ্ণতম বা শীতলতম অবস্থাকে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বলে। এই তাপমাত্রার পরিমানের উপর কোন স্থানের জরবায়ু অনেকাংশে নির্ভর করে।
যেমন, সূর্যের তাপ নিরক্ষরেখার উপর লম্বালম্বিভাবে পড়ে। ফলে এ এলাকার জলবায়ু উষ্ণ হয়। আবার এই নিরক্ষরেখার উত্তর ও দক্ষিন দিকে সূর্যের কিরণ ক্রমান্বয়ে তীর্যকভাবে পড়ে। ফলে এসব এলাকার তাপমাত্রা কম বা মাঝারি হয়। আর এই কম বা মাঝারি ধরনের তাপমাত্রাকে যথাক্রমে মেরুদেশীয় বা নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু বলে।
২. বায়ুর চাপ :
বায়ুর চাপ জলবায়ুর একটি উল্লেখযোগ্য উপাদান। বায়ুর চাপের পার্থক্যের কারনে বিভিন্ন স্থানের জলবায়ুর মধ্যেও পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। বায়ুর চাপের এই পার্থক্যের কারণ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন প্রকার জলবায়ুর বলয় সৃষ্টি হয়। যেমন: নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়, আন্তঃক্রান্তিয় অভিসরণ এলাকা ইত্যাদি।
৩. বায়ু প্রবাহ :
বায়ু প্রবাহ দ্বারাও আবহাওয়া ও জলবায়ু প্রভাবিত হয়। সমুদ্র থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু কোন দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হলে সে অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয় এবং তাপমাত্রা হ্রসে পায়। অপরদিকে স্থলভাগ থেকে প্রবাহিত বায়ুর প্রভাবে তাপের হ্রাস হয় না। এ বায়ু শুস্ক বলে এর দ্বারা বৃষ্টিপাতও হয়না অধিকন্তু তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
৪. বায়ুর আর্দ্রতা ও শুষ্কতা :
বায়ুতে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিকে আর্দ্রতা বলে। অপরদিকে কম জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু শুষ্ক হয়। এই আর্দ্রতা বা শুদ্ধতাও জলবায়ুর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
কোন অঞ্চলের বৃষ্টিপাত উক্ত অঞ্চলের বায়ুর আর্দ্রতা ও শুদ্ধতার ওপর সম্পূর্ন নির্ভরশীল। বায়ুর এ আর্দ্রতা ও শুষ্কতা কোন অঞ্চলের জলবায়ুকে শীতল ও উষ্ণ করে তোলে।
৫. বৃষ্টিপাত :
বৃষ্টিপাতের তারতম্যের কারণে জলবায়ুরও তারতম্য ঘটে। বৃষ্টি বেশী হলে সেখানকার জলবায়ু আর্দ্র ও শীতল হয়। অপরদিকে কম বৃষ্টিপাতের কারণে তাপমাত্রা বেশী এবং জলবায়ু শুষ্ক হয়ে থাকে।
jotikhatun publisher