ছোটবেলায় দুইটি গল্প পড়েছি, সেগুলি পুনর্বার পড়ার আগ্রহে গুগলে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি। ১) "অদ্ভুদ চা খোর" ২) "সামাজিকতার ভাষা" --কারো সংগ্রহে কি আছে?
0
0
1 Answers
6.2 K
0
Answered
2 years ago
গতকালের আড্ডার প্রায় ২৪ ঘণ্টা বাদে হ্যাং ওভার কাটিয়ে এই আড্ডার ফিডব্যাক নিয়ে লিখতে বসলাম। মার্চ মাসের পর থেকে লক ডাউন চলাকালীন সময় গুগল মিট আর জুমের মাধ্যমে এত ইন্টারভিউ দিয়েছি যে, ভিডিও কনফারেন্স শুনলেই প্যাভলভের প্রতিবর্ত ক্রিয়ার মত আমার হৃদ স্পন্দনের গতি চঞ্চল হয়ে ওঠে। তাই, এইরকম করুন অবস্থায় অনলাইন একটা আড্ডার খুব দরকার ছিল আমার জীবনে।
আমি বরাবরই বড্ড পানচুয়াল, এতটাই যে বিফোর দ্যা টাইম সবজায়গায় হাজির হয়ে যাই। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। গুগল মিটের রকে পৌঁছাতেই দেখা পেলাম সন্ময় দা আর হাদী দাদার। সমগ্র বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন হাদী দা। তাঁর গল্পের হাত ধরে পাবনা, বগুড়া আর ফরিদপুরের আনাচে কানাচে ঘুরে এলাম যেন মুহূর্তেই। আর তার সাথে ফাউ ছিল ওনার ছোট্ট মেয়ের মিষ্টি হাসি। আর সন্ময়দার কথা কী বলি? গুরুদেব মানুষ। সুমনের যোগ্য উত্তরসূরী (যদিও "ঘন্টাখানেক সঙ্গে সুমন" এ যে বিচিত্র প্রাণীগুলো আসে, আমরা তাদের মত চুলোচুলি করছিলাম না)। যাই হোক, আমাদের আড্ডার সম্মান রক্ষার্থে এত সুন্দর একখানা ঠেক আবিষ্কারের জন্য সন্ময়দাকে চিয়ার্স।
এরপর আমাদের ঠেকে যোগদান করলেন Subhendu & Subhendu (শুভেন্দু দত্ত (Subhendu Dutta) এবং User-9913192728164572098 )। সমস্ত বাধা অতিক্রম করে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যেমন ল্যাম্পের আলোয় পড়াশোনা করেছিলেন সেরকমই শুধুমাত্র মোবাইল স্ক্রিনের আলোয় অনলাইন আড্ডা মেরে দত্ত ভাই আমাদের সকলের মন জয় করে নিয়েছেন। আড্ডা মারার জন্য বাঙালির কাছে যে কোনো প্রতিকূলতাই ধোপে টেকে না তা আরও একবার প্রমাণ করে দেওয়ার জন্য শুভেন্দু কে কুর্নিশ। এর পরে ক্যারিশম্যাটিক জেল্লা (পড়ুন swag) নিয়ে সিংহী মশাই তার ফ্যান ফলোয়ারদের সামনে হাজির হলেন। শুধু হাজির হলেন তাইই নয়, বাঙালি আড্ডা যে শুধুমাত্র পিএনপিসিতেই সীমাবদ্ধ নয়, তার সংস্কৃতি যে কতটা উন্নত তা হাতেনাতে প্রমাণ করে দিলেন।
আমাদের ঠেকের কনিষ্ঠতম সদস্য আমাদের প্রিয় হবু ডাক্তারবাবু সোমনাথ । সম্ভবত পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই প্রথম ডাক্তার যিনি চেম্বার খোলা এবং ডিগ্রি পাওয়ার আগে রোগীর খোঁজ পেয়ে গেছেন। বাঙালির আড্ডার ইতিহাস যেমন চিরন্তন, তেমনই পেটের গণ্ডগোলে ভুগে পটল দিয়ে শিঙ্গী মাছের ঝোল খাওয়ার রেওয়াজও সেই টেনিদার আমল থেকে চলে আসছে। তাই, সোমনাথের জীবনে পেট রোগা মধ্যবিত্ত বাঙালি রোগীর যে অভাব ঘটবে না সে আমি নিশ্চিত। আর আপনাদের সবাইকে বলছি, শরীরের সমস্যা চিকিৎসা করানোর সাথে সাথে যদি কখনো মনে হয় একটু বাঙালির শিক্ষা, সংষ্কৃতি, চিত্রকলা অথবা সিনেমা নিয়ে বেশ একটা গঠনমূলক আলাপচারিতা করবেন, তাহলে অবিলম্বে সোমনাথের সাথে যোগাযোগ করুন। এমন শিল্পী ডাক্তার কিন্তু যথেষ্ট বিরল, তাই এই সুযোগ ছাড়বেন না।
এবার আসি আমাদের সকলের প্রিয় পারমিতাদির কথায়, যাকে ছাড়া আমাদের আড্ডার কোনো অস্তিত্বই নেই। সুন্দর করে সেজে আমাদের আড্ডাটাকে মাতিয়ে রেখেছিলেন। পারমিতাদি না থাকলে আমাদের আড্ডার সুন্দর মুহূর্তগুলোও হয়তো ফ্রেমবন্দি হতো না।
একঘন্টার এই আড্ডায় রাজনীতি, ইতিহাস, শিল্প, সাহিত্য কিছুই বাদ পরে নি। একবারের জন্যও মনে হয়নি যে আমরা প্রথমবার একে অপরকে দেখছি। ভারত বাংলাদেশের কাঁটা তারের বেড়া ডিঙিয়ে, সময়ের ব্যবধান কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আমাদের এই অনলাইন আড্ডায় কোথা দিয়ে যে এক ঘন্টা কেটে গেল বুঝতেই পারিনি। প্রতি মুহূর্তে মনে হয়েছে অনেকদিন বাদে আবার আমরা এক সাথে আড্ডা মারতে বসলাম, মনে হয়েছে "এদের সাথে তো আগেও আড্ডা দিয়েছি, এটাই তো স্বাভাবিক, এটাই তো হওয়ার ছিল।"
Mohon Ali publisher