কেন পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়িত করা সম্ভব হচ্ছে না?

1 Answers   5.6 K

Answered 2 years ago

চুক্তিতে একজন উপজাতিকে প্রধান করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক কার্যক্রম দেখাশুনার জন্য একটি উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনের কথাও বলা হয়েছে। চুক্তিতে বলা হয়েছে যে, উপজাতীয়দের ভূমি মালিকানা অধিকার নির্ধারিত হলে তাদের ভূমি ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এ উদ্দেশ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে ভূমির উপর মালিকানা নির্ধারণের জন্য ভূমি জরিপব্যবস্থা পরিচালিত হবে।


তিন পার্বত্য জেলার স্থানীয় সরকার পরিষদ সমন্বয়ে একটি আঞ্চলিক পরিষদ গঠন করা হবে। উপজাতীয় আইন এবং সামাজিক বিচারকাজ এই পরিষদের অধীনে থাকবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করা

উপজাতীয়দের ভূমি মালিকানা অধিকার ফিরিয়ে দেয়া।

পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা।

বর্তমান চুক্তির অধীনে পার্বত্য চট্টগ্রামে সামরিক বাহিনী মোতায়েন থাকবে, স্থায়ী সেনানিবাসও বহাল থাকবে। বিডিআর ছাড়া কেবল অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প, আনসার এবং গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করা হবে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় দেশের অন্যান্য স্থানের মতো বেসামরিক প্রশাসনের অধীনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা যাবে। আঞ্চলিক পরিষদ প্রয়োজনে এ ধরণের সাহায্য সহযোগিতার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাতে পারবে।


পার্বত্য শান্তি চুক্তির ফলে সে অঞ্চলে অর্থনৈতিক এবং অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। যোগাযোগ ব্যবস্থার যেমন উন্নয়ন হয়েছে তেমনি শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যখাতেও উন্নতির ছোঁয়া লেগেছে পার্বত্য এলাকায়। শান্তি চুক্তির পরে গত ২৫ বছরে পার্বত্য এলাকায় ব্যাপক পর্যটন বেড়েছে। এর ফলে স্থানীয় পাহাড়ি এবং বাঙালি উভয়েই আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। বাংলাদেশের যে কয়েকটি জায়গায় পর্যটকরা সবচেয়ে বেশি বেড়াতে যান তার মধ্যে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবান অন্যতম। শান্তিচুক্তি না হলে এটি কখনোই সম্ভব হতো না।


যে কারণে পুরোপুরি চুক্তি বাস্তবায়ন হচ্ছে না:


শান্তি চুক্তির পরে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে জটিল এক রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হয়েছে। চুক্তি সম্পাদনের সাথে সাথেই এর বিরোধিতা করে তৈরি হয়েছিল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট বা ইউপিডিএফ। বর্তমানে ইউপিডিএফ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির দুটো করে গ্রুপ রয়েছে। এরা সবাই পরস্পরের প্রতিপক্ষ। গত কয়েক বছর যাবত এসব সংগঠন একে অপরের সাথে সংঘাতে লিপ্ত। নিত্যদিন খুনোখুনি হচ্ছে। অবৈধ অস্ত্র এবং চাঁদাবাজি এখন সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে পাহাড়ে।


পাহাড়ে বেশ কিছু সশস্ত্র সংগঠন কার্যক্রম চালাচ্ছে যাদের দমন করতে রাষ্ট্রও সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করতে পারছে না।


বর্তমানে পার্বত্য অঞ্চলে শিক্ষার হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। চাকমা জনগোষ্ঠী শিক্ষা ও চাকরিতে বাঙালিদের মতোই অবস্থান তৈরি করে নিতে পেরেছে। সেনাবাহিনী এবং পুলিশেও তাদের অবস্থান আছে। অন্যরা কিছুটা পিছিয়ে আছে। এসব জনজাতি যত বেশি শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবে ততই মূল ধারার সাথে সম্পৃক্ততা বাড়বে। তারা মূলধারার সাথে যত বেশি সম্পৃক্ত হবে তত বিভেদ কমবে। এভাবেই পাহাড়ের সমস্যার সমাধান হবে।


Azim
azim
301 Points

Popular Questions