Answered 3 years ago
আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব ( General Theory of Relatively) থেকে আমরা প্রথম জানতে পারি যে মহাকর্ষ (Gravity) আলোর গতিপথকে প্রভাবিত করে, ঠিক যেভাবে মহাকর্ষ গ্রহ-উপগ্রহের গতিপথকে প্রভাবিত করে। (আলোকে গতিশীল “কণা” হিসেবে কল্পনা করলে এটা উপলব্ধি করতে সুবিধা হয়।) আলোর ক্ষেত্রে এই প্রভাব খুবই নগণ্য বলে পৃথিবীতে খালি চোখে বোঝা যায় না। আলোর ওপর মহাকর্ষের প্রভাব বুঝতে হলে খুব শক্তিশালী মহাকর্ষ ক্ষেত্র লাগবে, সৌরজগৎে একমাত্র সূর্যের কাছাকাছি গেলেই যা পর্যবেক্ষণযোগ্য।
(আসলে আপেক্ষিকতা তত্ত্ব প্রমাণ করতেও এই ব্যপারটা ব্যবহৃত হয়েছে। সূর্যগ্রহণের সময় আকাশের তারার ছবি তুলে সেটা রাতের আকাশের তারার ছবির সাথে তুলনা করা হয়েছিল। দেখা গিয়েছিল সূর্যের আশেপাশের তারাদের অবস্থান দুই ছবিতে ভিন্ন। ঠিক ততটাই ভিন্ন যতটা আইনস্টাইন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল সূর্যগ্রহণের সময় সূর্যের পাশ দিয়ে আসার সময় আলোকরশ্মি সূর্যের দিকে বেঁকে গেছে)
কৃষ্ণগহব্বরের মহাকর্ষ ক্ষেত্র এতটাই শক্তিশালী যে তার নির্দিষ্ট একটা দূরত্বের চেয়ে কাছে চলে গেলে আলো আর ফেরৎ আসতে পারে না। এই নির্দিষ্ট দূরত্বটিকে বলা হয় ঘটনা দিগন্ত (Event Horizon)। ঘটনা দিগন্তের ভিতরের কোনকিছু আমরা কখনো দেখতে পাব না, তাই আমাদের জন্য ধরে নেয়া যায় এই সীমার ভিতরে কোন ঘটনা ঘটে না।
ব্যপারটা মুক্তিবেগের (Escape Velocity) মাধ্যমেও ব্যাখ্যা করা যায়। মুক্তিবেগ হচ্ছে সেই বেগ যে বেগে কোন বস্তু উপরের দিকে ছুড়ে মারলে আর কখনো ফেরৎ আসবে না। পৃথিবীর ক্ষেত্রে মুক্তিবেগের মান ১২.৫ কিমি/ সেকেণ্ড। কৃষ্ণগহব্বর হচ্ছে সেই বস্তু যার মুক্তিবেগ আলোর বেগের চেয়েও বেশী। যেহেতু মহাবিশ্বে আলোর বেগের চেয়ে দ্রুত কোনকিছু চলতে পারে না, তাই কৃষগহ্বর থেকে কোনকিছু, এমনকি আলোও বের হয়ে আসতে পারেনা।
aariv publisher