Answered 3 years ago
একদিন এক জেলে নদীতে জাল ফেলে
সুন্দর একটি মাছ পেল। জেলেটি
নিজেও কোনও দিন এত সুন্দর মাছ
দেখেনি জীবনে। জেলে মনে মনে
ভাবল, এ মাছটি হাটে বিক্রি করে
আর কত বা দামই পাব? তার চেয়ে বরং
মহারাজকে এটি উপহার দিই, মহারাজ
তাতে খুশি হয়ে নিশ্চয়ই আমাকে ভাল
বকশিশ দেবেন। মনে মনে ভাবল,
বকশিশ যদি না-ও দেন তবুও ভাল।
দেখা যাক কতদূর কী হয়। এ-কথা ভেবে
মাছটি নিয়ে জেলেটি প্রাসাদে
গিয়ে মহারাজকে উপহার দিল খুব
আনন্দের সঙ্গে। মাছটি দেখে
মহারাজ দারুণ খুশি হয়ে জেলেকে
তখনই একশত মুদ্রা পুরস্কার দেওয়ার
আদেশ দিলেন। একটি মাছের জন্য এত
টাকা উপহার। মন্ত্রী মন থেকে মেনে
নিতে পারলেন না ব্যাপারটা।
মহারাজকে গিয়ে গোপনে বললেন,
মহারাজ, একটি মাছের জন্য এত টাকা
পুরস্কার দেওয়া যুক্তিসঙ্গত নয়।
দাম বড়জোর এক টাকার বেশি হবে
না।’ মহারাজ একটু বিরক্ত হয়ে বললেন,
কিন্তু আমি যে বলে ফেলেছি। তুমি
কি আমাকে মিথ্যেবাদী হতে বলো?
এখন পুরস্কার না দিলে জেলেই বা কী
ভাববে? আর আমি মিথ্যে কথা বলতে
পারব না।’ মন্ত্রী বললেন, ‘সে পরামর্শ
আপনাকে দিতে পারি আমি। আপনি
জেলেকে জিজ্ঞেস করুন, এ মাছটি
পুরুষ, না স্ত্রী-জাতীয় ? জেলে যদি
বলে এটি পুরুষ, তাহলে আপনি তাকে
জোড়ার স্ত্রী-জাতীয় মাছটি আনতে
বলুন। আর যদি বলে স্ত্রী-জাতীয়,
তাহলে পুরুষ মাছটি আনার আদেশ দিন
; বলুন, জোড়া পূর্ণ করে দিলেই আপনি
ওকে প্রতিশ্রুত পুরস্কার ডবল দেবেন।
দেখবেন, জেলে দ্বিতীয় মাছটি আর
আনতে পারবে না। কারণ ও জাতীয়
মাছ কোনওদিন কেউ দেখেনি।’
ইতিমধ্যে মহারাজও বুঝতে পেরেছেন,
পুরস্কারের পরিমাণটা খুব বেশিই হয়ে
গেছে। তিনি তাই মন্ত্রীর
পরামর্শমতো জেলেকে গিয়ে বললেন,
ধীবর, এটি পুরুষ মৎস্য, না
স্ত্রীজাতীয় ? চালাক জেলে এতক্ষণ
মন্ত্রীর হাবভাব দেখে আসল
ব্যাপারটা আঁচ করতে পেরেছিল। তাই
বেশ আত্মবিশ্বাস দেখিয়ে বলল, ‘এটি
নপুংসক মাছ, মহারাজ। এ মাছের
স্ত্রী-পুরুষ হয় না।’ রাজা জেলেটির
উপস্থিত বুদ্ধিতে খুশি হয়ে তাকে
দুইশত মুদ্রা পুরস্কার দিলেন।
জেলেটিও বাড়ি চলে গেল।
tasnimahmed publisher