Answered 2 years ago
প্রথমে ধন্যবাদ প্রশ্নটি করার জন্য। ঠিক কোথা থেকে শুরু করবো বুঝতে পারছি না। আমি ছোট একটি মফস্বল শহরে বড় হয়েছি, এলাকাটা মূলতো হিন্দু প্রধান তাই সবসময় নিজেদের মতো চলতে পেরেছি। তবে ছোটবেলায় " আকাটা, মালাউন..... "এই জাতীয় গালি, গরুর মাংস খাওয়ার প্রস্তাব, ঝালমুড়ির সাথে ইচ্ছেকৃত গরুর মাংসের ঝোল দিয়ে দেওয়া, বন্ধুর জন্মদিনে গরুর মাংস দেওয়া নুডুলস খেতে দেওয়া, দূর থেকে ভেসে আসা ওয়াজে হিন্দুদের নিয়ে খিস্তি..... এসব খুবই দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা।
তবে আমার ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রবল চাপ অনুভব করেছি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষিত বন্ধুরা যখন আমার সামনে আমার দেবদেবী নিয়ে কটুবাক্য প্রয়োগ করে তখনকার রাগের কোন ব্যাখ্যা হয় না, ইসলামের পথে আসার দাওয়াত তো অনবরত পাই এমনকি এখনো পাচ্ছি, খুব কাছের বন্ধুরাও এসব ক্ষেত্রে পাশে থাকে না, তার উপর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কিছু তথাকথিত গোমাংস ভক্ষণকারী হিন্দু বন্ধুরা বিড়ম্বনায় ফেলতো। রক্ত দিতে গিয়ে শুনেছি হিন্দুর রক্ত নিবো না। এক হিন্দু ছোটভাইকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে, ফ্রান্স নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়ার কারনে। পূজার আগে ছুটির জন্য ধর্না দিতে হয়েছে। চাকরি ক্ষেত্রে তো আরো বাজে অবস্থা, এক ম্যানেজার একবার বলছিলো ঈদে তো ছুটি পান, তাহলে আবার কেন ছুটি লাগবে। তখন হেসে বলেছিলাম, স্যার আপনারা ঈদের ছুটিটা পূজায় নিলেই তো হয়। আসলে ব্যাপার গুলো সমষ্টিগত ভাবে বড়, প্রতিনিয়ত ছোট ছোট কটাক্ষ শুনে এখন বিরক্তিকর লাগে এসব নিয়ে কথা বলতে।
অনেক কিছু কাটছাঁট করে, পরিমিত পরিমাণে লেখার চেষ্টা করেছি। কারন, সমস্যাটা ধর্মের চেয়ে বেশি মানসিক। মুসলিম অনেকের ধারণা হিন্দু হিসেবে আমরা ২য় শ্রেণির মানুষ। এই চিন্তাটাই ভয়াবহ। এই কারনেই হিন্দুদের কিছু বলতে, তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিতে, তাদের কোণঠাসা করতে, তাদের নামে টিপ্পনী কাটতে মুসলমানরা কখনোই ভাবে না৷ আমার যেসব মুসলিম বন্ধুরা ভালো ব্যবহার করে, সহানুভূতি দেখায়, তারা এই বিষয়গুলোকে স্ট্যাটাস সিম্বল / উদারতার প্রতীক হিসেবে দেখাতে চায়। যাইহোক, দেশে যেহেতু আছি খুব details কিছু শেয়ার না করায় ভালো। তাতে অন্তত আমার বাড়িতে আগুন জ্বলবে না।
Ripon Ahmed publisher