Answered 3 years ago
" দীর্ঘ তেতাল্লিশ রাত্রি সমুদ্রের বুকে কাটিয়ে আমরা বাঙ্গালা দেশে পৌঁছলাম। এ বিশাল দেশে প্রচুর চাল উৎপন্ন হয়। সারা পৃথিবীতে আমি এমন কোন দেশ দেখিনি যেখানে জিনিসপত্রের মুল্য বাংলার চেয়ে কম। পক্ষান্তরে এ একটি অন্ধকার দেশ। খোরাসানের লোকেরা বলে বাংলা ভালো জিনিসে পরিপূর্ণ একটি নরক। এক দেরহামে আটটি মোটা তাজা মুরগী, দু দেরহামে একটি মোটা তাজা ভেড়া এখানে বিক্রি হতে দেখেছি। এক স্বর্ণ দিনারে এখানে একজন সুন্দরী ক্রীতদাসী বালিকা বিক্রি হয়। " - ইবনে বতুতা
খোরাসানের লোকেরা বাংলাকে নরক কেন বলে তা তিনি বলে যাননি। অন্ধকারদেশও বোধগম্য নয়। হয়ত শুষ্ক আবহাওয়ার খোরাসানিরা বাংলার বৃষ্টিপাতকে সহ্য করতে পারতো না, তাই নরক আর জলা জঙ্গলাকীর্ণ দেশবলে অন্ধকারের দেশ বলা হয়েছে ।
কোরার সদস্য কুশল কুমার দাস নিম্নের অংশটুকু যোগ করতে অনুরোধ করেছেনঃ
আরও অনেক কারণ থাকতে পারে বাংলাকে জাহান্নাম বলার ৷ আমি তার মধ্যে মাত্র দুটি কারন উল্লেখ করব ৷ ১) ভারতে যতজন পরিব্রাজক এসেছিলেন তার মধ্যে শতকরা দশভাগেরও কম বাংলার মূল ভুখন্ডে এসেছেন ৷ আসাম হয়ে সোজা উত্তরবঙ্গ ছুঁয়ে তারা বেশীরভাগই বিহার উড়িষ্যা উত্তরপ্রদেশে ঢুকে পড়ে ৷ যদিও সেই সময় ওইসব জায়গার অন্য কিছু ছিল ৷ এর কারন হল অনেক পরিব্রাজকদের লেখা থেকে পাওয়া যায় যে এখানে আসলে ম্যালেরিয়া , কলেরা, বসন্ত ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃৃৃৃৃৃত্যু মুখে পতিত হবার সম্ভাবনা বেশী ছিল ৷ বিদেশীদের এইসব রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কম ছিল ৷ তাই তারা মূল বাংলাকে এড়িয়ে চলতেন এবং যেহেতু এখানে আসলে মৃৃৃৃৃৃত্যুভয় কাজ করত তাই তারা এই অঞ্চলকে জাহান্নাম বা নরক হিসাবে ভাবত ৷২) ভারতের অন্যন্য অঞ্চলের তুলনায় বাংলায় হিন্দুত্বের প্রতি আসক্তি কম ছিল ৷ এখানে মাত্র নয়শত বছর আগেও বৌদ্ধ ধর্ম ও ধর্ম ঠাকুর এরপ্রভাব ছিল বেশী ৷ তার উপর আমিষভোজী মানুষ অনেক বেশী ছিল ৷ যাভারতের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে মানানসই ছিলনা ৷ অন্যান্য অংশের ধর্মীয় গুরুরা তাই এ অঞ্চলের মানুষকে ছোট চোখে দেখতেন ও নরকগামী মনে করতূন ৷ এরই প্রভাব পরিব্রাজকদের লেখায় ও বর্ননায় পাওয়া যায় ৷ আশাকরি এই দুটো কারন অন্তর্ভুক্ত করে নেবেন ৷
rahatahmed09 publisher