আফগানিস্তানের সহায়তায় কোনো দেশ এগিয়ে আসছে না কেন?

1 Answers   4.6 K

Answered 2 years ago

কোনো দেশ কেন সহায়তা করছে না, এই প্রশ্ন করার আগে এটা প্রশ্ন করা দরকার যে ঠিক কি সহায়তা আপনার মনে হয় এখানে দরকার?

গত ২০বছর ধরে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে ১ ট্রিলিয়ন টাকা ঢেলেছে। তার মধ্যে ৮০০ বিলিয়ন যুদ্ধের খরচা এবং বাকি ২০০বিলিয়ন রিস্টোরেশন প্রজেক্টে। তার মধ্যে সেই দেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার তথা নতুন সংবিধান গড়া, সেখানে একটি আফগান সেনাবাহিনী ও পুলিশ তৈরি করা এবং তাদের কে শিক্ষাপ্রাপ্ত করা, ইত্যাদি আছে। ভারত সরকার সেখানের সংসদ ভবন তৈরি করে দিয়েছে, এবং সালমা ‍বাঁধ গঠন করেছে। এমনকি ওখানের অনেক সেনা ভারতে শিক্ষাপ্রাপ্ত হয়েছে, সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পদের শিক্ষা গ্রহণ করেছে ভারতীয় সেনার অ্যাকাডেমিতে।

কিন্তু আমরা দেখেছি যে মাত্র ৮৫০০০ তালিবান বাহিনী এই ৩ লাখ সৈন্যের বিপুল সেনাবাহিনীকে বিনা যুদ্ধে জয় করেছে, কার্যত বিনা যুদ্ধে গোটা দেশ তথা রাজধানী কাবুল দখল করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রেখে যাওয়া হেলিকপ্টার এবং সাঁজোয়া গাড়ি তালিবান নিজেদের হাতে পেয়ে গেছে। সুতরাং ঠিক কি সাহায্য এখন আফগািস্তানের দরকার যা শেষ ২০ বছরে দেওয়া হয়নি?

অপরদিকে, আফগানিস্তান থেকে বিভিন্ন দেশ, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, গ্রেট ব্রিটেন, ইত্যাদি দেশ তাদের নিজেদের কূটনৈতিক এবং নাগরিকদের সাথে সাথেই অনেক আফগানি যারা তাদের সেনা, কূটনৈতিক বা নাগরিকদের সাহায্য করেছে, এবং সেই কারণে তালিবানদের হত্যার লক্ষ্য হয়ে উঠেছে, বা নারীবাদী লেখক লেখিকা কিংবা সাংবাদিক যাদের কে তালিবান তাদের শরিয়ত আইনের মোতাবেক পাপী মনে করে, সেই সব আফগান নাগরিকদের আশ্রয় দেবার চেষ্টা করছে। কিন্তু আফগানিস্তানের যে সংখক মানুষ সেই দেশ ছেড়ে পালাতে চায় তাদের যাবার কোনো জায়গা নেই। কোনো দেশই এত এত আফগান মানুষকে নিজেদের দেশে ঠাই দিতে সক্ষম নয়। বা সক্ষম হলেও আগ্রহী নয়। যেমন তুরস্ক, ইরান সীমান্তে বিশাল প্রাচীর নির্মাণ করছে যাতে আফগান নাগরিকরা সেই দেশে প্রবেশ না করতে পারে। আফগািস্তানের আশপাশের দেশ যেমন তুর্কমেনিস্তান, কির্ঘিস্তান, ইত্যাদি এরাও বিশেষ আগ্রহী নয় বেশি করে আফগান সেনা বা নাগরিকদের জায়গা দিতে। বাংলাদেশ জানিয়ে দিয়েছে তারা অপরাগ।

আফগনিস্তানের পঞ্জসহির অঞ্চলে আহমদ শাহ মাসুদ তালিবান বিরোধী শক্তি "নর্দার্ন অ্যালায়েন্স" গড়ে তুলেছে এবং সেখানে ছত্রভঙ্গ আফগান সেনা হাজির হচ্ছে। সেখান থেকে যদি তালিবান বিরোধী প্রতিরোধ গড়ে ওঠে, সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশ, তাদের কূটনৈতিক এবং আন্তরজাতিক কারণ অনুসারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে তাদের সাহায্য করবে। কিন্তু তার আগে অবশ্যই সব দেশ নিজেদের নাগরিকদের আফগানিস্তান থেকে ফিরিয়ে আনতে চাইবে, যা এখন ঘটছে। সেই সময় তালিবান কিভাবে দেশ শাসন করছে সেটাও বিশ্বের কাছে প্রকট হয়ে উঠবে।

Trycia Towne
oishe
366 Points

Popular Questions