Answered 3 years ago
আমি বাংলা ও ইংরেজি ছাড়া স্কুলে দু বছর সংস্কৃত এবং Matriculation এ উর্দু নিয়ে পাশ করেছি। সংস্কৃত পড়ার কল্যানে হিন্দিটাও পড়তে পারি এবং মোটামুটি বলতেও পারি। চাকুরী থেকে অবসর নেবার পরে সময় কাটাবার জন্য ইন্টারনেটে তমিল (তামিল নয়) শেখা শুরু করি। এখন মোটামুটি পড়তে পারি।
শুদ্ধ তমিলে ব্যঞ্জনবর্ণের সংখ্যা ১৮ টি। সেগুলো হলো :
ক , ঙ . চ , ঞ . ট, ণ, . ত, ন, প, ম,
য়, র, ল, ৱ , ল, ল . র, ন ( তিন রকমের ‘ন’ . দুরকমের ‘র’ এবং তিন রকমের ‘ল’ )
এই ১৮ টি ব্যঞ্জনবর্ণের মধ্যে ৯ টি বর্ণ দিয়ে কোনো শুদ্ধ তমিল শব্দ শুরু হয় না।
সেগুলো হলো: ঙ , ট , ণ , র , ল , ল , ল , র , ন .
এই ৯টি অক্ষর দিয়ে কোনো শব্দ লিখতে হলে প্রথমে ‘ই ‘ যোগ করে সেই শব্দটি লিখতে হবে। যেমন:
রামন (রাম) = ইরামন। লক্ষণ = ইলট্চুৱণ্. লঙ্কা = ইলঙ্গই ইত্যাদি। তবে এখন বেশ কিছু পরিবর্তন হয়েছে।
৬টি বর্ণ সংস্কৃত থেকে এনে পরিবর্তন ঘটিয়ে ব্যবহার করা হয়। সেগুলো হলো :
স, ষ, জ, হ, ক্ষ, শ্রী। কিন্তু এই ৬টি বর্ণকে বিশুদ্ধ তামিলে ব্যবহার করা হয় না। আধুনিক তামিলে অবশ্য এগুলোর ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
মাত্র ১৮ টি ব্যঞ্জনবর্ণ দিয়ে কী ভাবে অন্যান্য বর্ণের ঘাটতি পূরণ করে দেখা যাক:
க ক ( ক ,খ , গ , ঘ , হ ) ச চ ( চ , ছ , জ , ঝ , স , শ , ষ ) ட ট ( ট ,ঠ , ড , ঢ ) த ত ( ত , থ ,দ , ধ ) ப প ( প , ফ , ব , ভ )
শুরুতে ‘হ’ দিয়ে শব্দ লিখতে হলে অ , আ , ই ইত্যাদি ব্যবহার করে। যেমন : ‘হনূমান’ হয়ে যায় ‘অনুমান’ ,
‘হিন্দু ‘ হবে ‘ ই ন্ দু’ ইত্যাদি।
বর্ণের সল্পতার ফলে অ-তমিল শব্দ ঠিক ভাবে উচ্চারণ করা যায় না। তমিলে কোনো যুক্তাক্ষরের প্রয়োগ নেই।
‘সুব্রহ্মণ্যম’ লিখতে হলে ‘ চু প্ র ম ণি য় ম্’ লিখতে হবে। ‘গান্ধী’ লিখতে হলে ‘কা ন্ তি ’ লিখতে হবে। তমিলেরা গান্ধীকে ‘কান্দি’ বা ‘গান্দি’ উচ্চারণ করে। মাধবনকে মাদৱন উচ্চারণ করে। বাংলায় অন্তঃস্থ ‘ব’ থেকেও না থাকার ফলে ইংরেজি V কে BH (ভ ) উচ্চারণ করে হাস্যাস্পদ হতে হয় অবাঙালিদের কাছে। প্রায়ই শুনতে হয় - ‘আপনারা raVindranath (pronounced as rawindranath) কে raBindranath কেন বলেন? very (wery) কে কেন bhery বলেন? অসমীয় ভাষাতেও অন্তঃস্থ ‘ব’ (ৱ) আলাদা ভাবে ব্যবহার করা হয় । অথচ আমরা এটিকে বর্ণমালা থেকে একেবারে বিসর্জন দিয়ে দিয়েছি। আমরা যদি সকলে এখন থেকে এই সমস্ত digital প্লাটফর্মে ‘ ৱ ‘ কে অন্তঃস্থ ‘ব ‘ হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করি তাহলে কেমন হয় ? অভ্র তে ডিফল্ট বর্ণমালায় ‘ৱ ‘ কে নিয়ে এলে ভালো হয়। প্রথম প্রথম একটু অসুবিধে হবে ঠিকই , কিন্তু পরে অভ্যেস হয়ে যাবে।
দক্ষিণ ভারতের অন্য তিনটি ভাষা তেলগু , কন্নড় ও মালয়লম - এগুলোর বর্ণমালা প্রায় বাংলারই মতো। শুধু দীর্ঘ ‘এ’ এবং দীর্ঘ ‘ও’ ছাড়া।
তমিলের তুলনায় তেলুগু অনেকটাই সহজ। এর বর্ণমালা প্রায় বাংলা / হিন্দিরই মতো। তবে অনেকগুলো বর্ণ প্রায় একই রকম দেখতে। ফলে পরিচিত শব্দ না হলে পড়া খুব মুশকিল হয়ে পড়ে। যেমন : న (ন) , స (স) , వ (ব) , ప (প) . এরকম আরো কিছু বর্ণ আছে যার সঙ্গে আকার , ইকার ইত্যাদি জুড়লে প্রায় এক রকম দেখতে হয়ে যায়।
তেলুগু এখন মোটামুটি পড়তে পারি। সহজ বাক্য হলে মানেও বুঝতে পারি। তবে এখানে একটা অসুবিধে হচ্ছে - সন্ধি ও সমাসের প্রাবল্য। দুটো বা তিনটে পাশাপাশি শব্দকে এখানে অনায়াসে জুড়ে দেওয়া হয়। অবশ্যই সন্ধির ব্যাকরণ মেনেই । কিন্তু অসুবিধে হলো, এরকম কোনো যুক্ত শব্দের মানে খুঁজতে গেলে অভিধানে তা পাওয়া যায়না। সন্ধি বিচ্ছেদ করে আসল শব্দ বের করে, তবে অভিধানে খুঁজতে হয় ।
thenh publisher