Answered 2 years ago
ধরুন, আপনি একটি জনবহুল জায়গায় আছেন। আপনার চারপাশে মানুষ আর মানুষ। যেদিকে তাকান, ১০ থেকে ১৩ জন পুরুষ। প্রায় শ খানেক পুরুষ আছে আপনার আশেপাশে। কেউ বসে আছে, কেউবা হাঁটছে, কেউ অন্যজনের সাথে কথা বলছে। নারী-পুরুষ কেউ কারো দিকে খেয়াল করছে না।
আপনি এক পলক সবার দিকে তাকালে কী বুঝতে পারবেন- কার মনে কী চলছে? কে কী ভাবছে? মানুষের মনের কথা কী এভাবে তাকালেই বুঝা যায়? যায় না। তবে যদি আপনি মানুষের মনের কথা বুঝতেন, একবার তাকালেই বুঝে নিতেন কে কী ভাবছে?- তাহলে দেখতেন এদের মধ্যে কোনো কোনো পুরুষ আপনাকে নিয়ে বা অন্য কোনো নারীকে নিয়ে অথবা কোনো শিশুকে নিয়ে মনে মনে চরম যৌন উত্তেজনা বোধ করছে।
শুনতে খুব অবাক লাগছে, তাই না? আমিও অবাক হয়েছিলাম। কিন্তু পরে ভেবে দেখি, না কথা ঠিকই আছে। দিনে দিনে আমাদের দেশ সহ বিশ্বের অন্যান্য দেখে যে হারে ধর্ষণের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে উপরের ঘটনা আমাদের সবার ঘটে।
ধর্ষণের পিছনে কারণ কী? কেন একজন পুরুষ ধর্ষক রূপে আবর্তিত হোন? কেনই বা নারী-শিশু-বৃদ্ধ-ছেলে ধর্ষিত হয়? অবাক হওয়ার মতো কথা এই যে, পশু-পাখি-জীবজন্তুরাও এই তালিকা থেকে বাদ নেই।
তাহলে কেন এই ঘটনা গুলো ঘটে এবং দিনে দিনে বেড়ে চলেছে?
মানুষের মন হলো এক রহস্যময় জগত। এই জগতের খবর, রহস্য বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারে না। আপনি বা আমি অথবা আমাদের মতো নারীরা যারা বাইরে আসা-যাওয়া করি, কাজ করি, আমরা কেউই বলতে পারবো না, যে আমি নিরাপদ। আমাদের সবার আশেপাশেই এমন অনেক মানুষ পাওয়া যাবে যার মনের ভেতরে লুকিয়ে আছে জটিল এক অংক।
এই অংকের সমাধানই সমাধান ও তার কিছু কারণ সহ অন্যান্য বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে “মানসাঙ্ক “নামক বইতে। এই বইতে আছে আমাদের কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তর।
বইটাতে কয়েকটি তথ্য নয় বরং অবাক করা তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
·
ধর্ষণের পিছনে ৩টি বিষয় কাজ করে। মেন্টাল সেট আপ, নির্জন জায়গা, উদ্দীপক- এই তিনটি যখন একই সাথে পাওয়া যায়, তখনি একজন পুরুষ ধর্ষণের সুযোগ ছাড়েন না।
·
ধর্ষকের আবার প্রকারভেদ আছে। স্যাডিস্ট রুচি(৮%), রেপ মিথে বিশ্বাস(২৫%), নারীর প্রতি রাগ( ৩২%), স্বভাবগত রাগী(১১%), সুযোগসন্ধানী(২৩%)। এই ধরণের লোকগুলো তো আমাদের আশেপাশেই ছড়িয়ে আছে। কিন্তু আমরা কী জানি তারা কারা?
·
২০-২৫% নারী তাদের কলেজ জীবনে ধর্ষণ কিংবা ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হোন। (U.S DEPARTMENT OF JUSTICE)
·
প্রতি ৫ জনের ১ জন হাইস্কুলের ছাত্রী তাদের প্রেমিকের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়ে থাকে।
·
যুক্তরাষ্ট্রে ৮১% নারী ও ৪৩% পুরুষ তাদের সারা জীবনে একবার হলেও যৌন হয়রানির শিকার হোন।
এমনি আরো নানা ভয়ংকর তথ্যে ভরপুর মানসাঙ্ক বইটি। জানি না, তথ্যগুলো কতটুকু সত্য বা মিথ্যা? তবে আমরা যে মানুষ হিসেবে খুব নিচু জাতে আছি, আমাদের যে মনুষ্যত্ব দিনে দিনে বিলোপ হচ্ছে, তা এই বইতে দেওয়া তথ্যগুলো পড়লেই বুঝবেন।
বইটি লিখেছেন ডা. শামসুল আরেফীন। উনার আরেকটি বই কিছুদিন আগে পড়েছিলাম কষ্টিপাথর। সেখানেও অনেক অজানা বিষয় সম্পর্কে জেনেছি।
popykhatun publisher