Answered 3 years ago
তখন সবেমাত্র পর্তুগাল এসেছি। পর্তুগীজ ভাষা একদমই না জানায় প্রায়ই গলদঘর্ম হতে হত, সে রেস্টুরেন্টেই হোক আর সুপারমার্কেটেই হোক, বিশেষ করে যদি ক্যাশিয়ার ইংরেজি না বুঝত। লিসবন শহরের সব বাঙালি রেস্টুরেন্ট, বাঙালি গ্রোসারি শপ, দেশি মাছ-মাংসের দোকান সবই মার্তিম মনিজ এরিয়া তে। তখন বাঙালি রেস্টুরেন্ট ২/১ টা যাও ছিল তাতে ভাত তরকারী সিঙারা সমুচা ছাড়া তেমন কিছু পাওয়া যেত না। মাঝে মধ্যে দেশী মিস্টি, দই বা জিলাপী খেতে মন চাইলেও কিছু করার ছিল না।
পর্তুগালের সবচেয়ে বড় সুপার মার্কেট চেইন হচ্ছে পিঙ্গো দোস (Pongo Doce). একদিন ওখানে গেলাম বাজার করতে। তো ফ্রোজেন সেকশনের পাশে যেখানে দই, মাখন, চিজ ইত্যাদি দুগ্ধজাত খাবার রাখা হয় সেখানে চোখ বুলিয়ে দেখছিলাম কিছু নেয়া যায় কিনা। হঠাৎ চোখে পড়ল ছোট্ট কাচের কৌটায় ক্রীম রঙের একটা বস্তু। নেড়ে চেড়ে দেখলাম। লেবেল দেখে বুঝা গেল ওটা মিস্টি জাতীয় কিছু হবে। সুপারমার্কেটের এক কর্মচারি কে জিজ্ঞেস করাতে সে বলল এটা Arroz Doce (উচ্চারণ “আখোঁজ দোস”, তখনো জানতাম না যে “র” কে ওরা “খ” এর মত উচ্চারণ করে)। যাই হোক, মিস্টি খাবার যেহেতু আমার পছন্দ তাই ভাবলাম নিয়েই যাই দেখা যাক জিনিসটা কি।
বাসায় এসে কৌটা খুলে চামচে নিয়ে একটু মুখে দিয়ে তো আমি স্তব্ধ। আরে এতো আমাদের দেশের পায়েস ! কোনো তফাত নেই, শুধু এরা খাওয়ার আগে উপরে একটু চকলেট পাউডার ছিটিয়ে দেয়। পরে নেট ঘেটে ঘেটে দেখলাম আমরা যেভাবে পায়েস তৈরি করি পর্তুগীজরাও সেভাবেই ঘন দুধ, চাল আর চিনি দিয়ে পায়েস তৈরি করে। এটি এদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাবার। সাত সমুদ্র তের নদী পেরিয়ে বাংলার পায়েস কিভাবে ফিরিঙ্গির দেশে এল সে এক রহস্য ।
abirahmed publisher