অশালীনতা বা পোশাকের স্বাধীনতার কুফল বা পরিনতি কী?

1 Answers   12.1 K

Answered 2 years ago

জটিল প্রশ্ন।কারণ: আমাদের আগে নির্ণয় করতে হবে অশালীন পোশাক কোন পোশাক কে বলা যেতে পারে। মানে সর্বসাধারণ, সর্বদেশে, সর্ব জাতিতে প্রযোজ্য হবে এরকম অশালীন পোশাকের সংজ্ঞা কি হতে পারে?

ধরুন আমি বললাম গামছা পড়া অশালীন পোশাক। এবার আমার কথা কে মানবে? কেন মানবে? আমি জোর করে মানাতে যাবো? সেই ক্ষমতা আমার আছে? যদি থেকেও অন্যের অধিকার খর্ব করার অধিকার কি আমার আছে? থাকলেও (আমার ব্যক্তিগত মগের মুল্লুকে) অন্য দেশেও কি তা আছে?

দেখুন, শিক্ষিত আর প্লাজমা স্টেটে থাকা অ&পদার্থ লোকের মধ্যে একটাই পার্থক্য থাকে। জানেন ক, সেটা কি? সেটা হচ্ছে কাণ্ডজ্ঞান। কোন জায়গায় কি বলতে হবে, করতে হবে, কি পড়তে হবে এটা হচ্ছে কাণ্ডজ্ঞান। আপনার যদি কাণ্ডজ্ঞান না থাকে তাহলে আপনার এমনিতেও তো স্বাধীনতা নেই, তাইনা? কারন সেক্ষেত্রে আপনি অন্য কারও বলা কথায় বা শুনা কথায় উঠবোস করছেন।

পোশাক স্বাধীনতার সুফল হচ্ছে আমি এখন যে জায়গায় বসে আছি সেখানে বাইরের তাপমাত্রা ১০-১২ ডিগ্রি। কয়েকদিন পর আরো নীচে চলে যাবে। বিশ্বের বহু জায়গায় তাপমাত্রা শূন্যের নীচে থাকে বছরের বেশিরভাগ সময় ই। তো ওই সময় আমি বা আমার মতো লোকেরা শীতের কাপড় গায়ে দেই। এর জন্য কোন সেন্ট্রাল অথরিটির/ টম এন্ড জেরির/ বইয়ের কাছ থেকে আবেদন পত্র সই করিয়ে আনতে হয় না। আবার একই জায়গায় গরমের দিনে তাপমাত্রা চলে যায় প্রায় ৫০ এর ঘরে; তখনও আমি পাতলা কাপড় পড়তে চাই - এই কথা বলে কারও সাথে দরবার করতে হয় না। আপনার মনে হতে পারে এতে যথেষ্ট কুফল রয়েছে, কিন্তু সেটা সম্পুর্ন আপনার মতামত, তাতে কারও কিছু যায় আসেনা।

এবার কাণ্ডজ্ঞান থাকলে কেন প্রচুর সুবিধা তা আমি বলি, কয়েকমাস আগে আমি অমৃৎসরের স্বর্ণমন্দির যাই। সেখানে নিয়ম হচ্ছে খালি মাথায় প্রবেশ করা যায় না; সবাইকে কোন না কোন কাপড় জড়িয়ে নিতে হয়। কাপড় বা রুমাল না থাকলেও চাপ নেই, সেখানেই এগুলো পাওয়া যায়। তো আমিও যথারীতি মাথায় কাপড় জড়িয়ে নিলাম। সিম্পল। তার এক দুমাস পর পাহাড়ে চড়তে গেলাম, সেখানে দ্রুত শুকিয়ে যায় এমন জামাকাপড় পড়তে হয়, তথা শীতের কিন্তু কম ওজনের কাপড় প্রয়োজন, তখন সেটা পড়লাম। এর এক দু মাস পর এক বিজ্ঞান সম্মেলনে গেলাম যেখানে বিলেতি সাহেবী পোশাক পড়ার বিধান, তাও পড়লাম। আবার প্রতিবার বাড়িতে এসে স্নান করার আগে ও পরে গামছা পড়লাম, বাকি সময় প্যান্ট, সাধারণ জামা পড়লাম। পুজোতে ধুতি পড়লাম। এর আগে স্কুল কলেজে সেখানে ইউনিফর্ম পড়েছি। তো এই প্রত্যেক ক্ষেত্রেই আমাকে টম এন্ড জেরীর পারমিশন নিতে হয় নি, পাতি কাণ্ডজ্ঞান অনুসারে স্থান কাল ভেদে পরিবর্তন করে নিয়েছি।

এবার আপনি বলবেন এগুলো পয়েন্ট না, আপনি পুরুষ বিধায় সাপের পাঁচ পা আর হাতির ডানা দেখতেই পারেন, মেয়েরা (পশ্চিমের কোন দেশে ) কেন স্বল্প পোষাক পড়বে?

ও ব্যাপার হচ্ছে আপনাকে যদি এরকম পোশাক পড়তে কেউ বাধ্য করে এবং আপনার তাতে একদমই ইচ্ছা না থাকে তাহলে আপনি সোজা পুলিশ কে গিয়ে কেন বলছেন না? ওনার যেমন ওনার পোশাক পড়ার অধিকার রয়েছে (প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম/ ইউনিফর্ম, যদি না থাকে) আপনারও ঠিক সেমনটাই রয়েছে।

দ্বিতীয়ত: সারাদিন ঘরের কোণে বসে থাকবেন না। মাঝে মধ্যে নিজের এলাকার বাইরে বের হোন। দেশ বিদেশে যান। দেখতে পাবেন পৃথিবীর বেশিরভাগ জায়গাই বৈচিত্রময়, বিশেষ করে যেখানে ভদ্রলোকের থাকে। আমাকে আমার এক সহপাঠিনী বলেছিল- "আপনাগো লোক কোথায় কোন সাত সমুদ্র রাইন নদীর পাড়ে কোন মেয়ে শর্টস্কার্ট পড়লো তা দেখতে পেল কিন্তু ওই রাইন নদীর তীরের প্রায় একই রকম তিনটে মেয়ে ন্যানো টেকনোলজির বিশ্বের ২% বৈজ্ঞানিকের দলে নিজেদের নাম লিখিয়ে নিল ,তা দেখতে পেল না!"

আমি বললাম- এসব বলে আর লজ্জা দেবেন না, এনাদের কি বিশেষণে ভূষিত করা যায় তা নিয়ে বিখ্যাত এবং উঠতি লেখক অভিক অর্জুন দত্ত সুদীর্ঘ গবেষণা করে শেষমেশ চামচিকের সাথে বেজায় মিল থাকায় থাকায় "চাঁনবোদ" নাম দিয়েছেন।

Hossain Kabir
hossainkabir
303 Points

Popular Questions